Loading [MathJax]/jax/output/CommonHTML/jax.js

ম্যাট্রিক্স ও নির্ণায়ক (অধ্যায় ২)

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - উচ্চতর গণিত উচ্চতর গণিত – ১ম পত্র | - | NCTB BOOK
3.1k
3.1k

ম্যাট্রিক্স (Matrix)

ম্যাট্রিক্স হলো সংখ্যা, প্রতীক, অথবা অভিব্যক্তির আয়তাকার বিন্যাস। একাধিক সারি (row) এবং কলাম (column) নিয়ে গঠিত একক সংগ্রহই হচ্ছে ম্যাট্রিক্স। এটি লিনিয়ার অ্যালজেব্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ম্যাট্রিক্স সাধারণত m×n আকারে উপস্থাপিত হয়, যেখানে m নির্দেশ করে সারির সংখ্যা এবং n নির্দেশ করে কলামের সংখ্যা। ম্যাট্রিক্সের প্রত্যেকটি উপাদান নির্দিষ্ট স্থানে থাকে এবং এটি একটি নির্দিষ্ট মান প্রকাশ করে।

ম্যাট্রিক্সের ব্যবহার

ম্যাট্রিক্স বিভিন্ন গাণিতিক, প্রকৌশল, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যেমন ইমেজ প্রসেসিং, ডেটা বিশ্লেষণ, 3D গ্রাফিক্স এবং মেশিন লার্নিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এটি লিনিয়ার সমীকরণ সমাধানে এবং ভেক্টর ও স্পেস ট্রান্সফরমেশনে সহায়ক।

ম্যাট্রিক্সের প্রকারভেদ

  1. বর্গাকার ম্যাট্রিক্স (Square Matrix): সারি ও কলামের সংখ্যা সমান হলে সেটিকে বর্গাকার ম্যাট্রিক্স বলা হয়। যেমন, 2×2 বা 3×3 ম্যাট্রিক্স।
  2. আয়তাকার ম্যাট্রিক্স (Rectangular Matrix): সারি এবং কলামের সংখ্যা সমান না হলে সেটি আয়তাকার ম্যাট্রিক্স।
  3. শূন্য ম্যাট্রিক্স (Zero Matrix): সব উপাদান শূন্য হলে তাকে শূন্য ম্যাট্রিক্স বলা হয়। যেমন, [0000]
  4. ঐক্য ম্যাট্রিক্স (Identity Matrix): বর্গাকার ম্যাট্রিক্স, যেখানে প্রধান কর্ণে ১ এবং বাকি সব স্থানে শূন্য থাকে। এটি I দ্বারা প্রকাশিত হয়, যেমন [1001]
  5. ডায়াগোনাল ম্যাট্রিক্স (Diagonal Matrix): বর্গাকার ম্যাট্রিক্স, যেখানে শুধুমাত্র প্রধান কর্ণের উপাদানগুলি শূন্য নয়, আর সব উপাদান শূন্য।

নির্ণায়ক (Determinant)

নির্ণায়ক হলো ম্যাট্রিক্সের একটি স্কেলার মান যা ম্যাট্রিক্সের গুণফল এবং তার বিপরীত (inverse) থাকলে সেটি সনাক্ত করতে সাহায্য করে। এটি শুধুমাত্র বর্গাকার ম্যাট্রিক্সের জন্য সংজ্ঞায়িত এবং |A| বা det(A) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। নির্ণায়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ কারণ এটি বলে দেয় যে একটি ম্যাট্রিক্স রৈখিক স্বাধীন (linearly independent) কিনা এবং সেটির বিপরীত (inverse) আছে কিনা।

নির্ণায়কের গাণিতিক সংজ্ঞা

ধরা যাক একটি 2×2 ম্যাট্রিক্স A=[abcd], তাহলে এর নির্ণায়ক:

|A|=adbc

নির্ণায়কের ব্যবহার

  1. লিনিয়ার সমীকরণের সমাধান: নির্ণায়ক ব্যবহার করে সমীকরণ সমাধান করা যায়, যেমন ক্রেমার নিয়ম।
  2. ম্যাট্রিক্সের ইনভার্স: যদি নির্ণায়ক শূন্য না হয়, তবে ম্যাট্রিক্সের ইনভার্স থাকে।
  3. বক্রতা নির্ণয়: নির্ণায়ক ব্যবহার করে একটি ফাংশনের বক্রতা বা আকার নির্ধারণ করা যায়।
  4. ভেক্টর স্পেস ট্রান্সফরমেশন: নির্ণায়ক বিভিন্ন গাণিতিক ট্রান্সফরমেশন নির্ধারণে ব্যবহার হয়।

নির্ণায়ক গণনার নিয়ম

  1. 2×2 ম্যাট্রিক্স: উপরের নিয়মে আমরা |A|=adbc পেয়েছি।
  2. 3×3 ম্যাট্রিক্স: ধরা যাক, A=[abcdefghi]। এর নির্ণায়ক হবে:

|A|=a(eifh)b(difg)+c(dheg)

  1. বড় আকারের ম্যাট্রিক্স: নির্ণায়ক গণনা করা বড় ম্যাট্রিক্সের জন্য অপেক্ষাকৃত জটিল, সাধারণত ল্যাপলেস এক্সপানশন বা রো রিডাকশন ব্যবহার করা হয়।

সারসংক্ষেপ
ম্যাট্রিক্স ও নির্ণায়ক গাণিতিক বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ম্যাট্রিক্সের ব্যবহার বিভিন্ন গণিত ও প্রকৌশল ক্ষেত্রে সমাধান প্রক্রিয়া সহজতর করে, আর নির্ণায়ক আমাদের ম্যাট্রিক্সের বিশেষ বৈশিষ্ট্য বুঝতে সাহায্য করে, যা সমীকরণ সমাধান এবং অন্যান্য গাণিতিক প্রয়োগে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

ম্যাট্রিক্স ও ম্যাট্রিক্সের প্রকারভেদ

1.4k
1.4k

ম্যাট্রিক্স বা ত্রৈমাত্রিক বীজগণিতের মধ্যে বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে, যা সাধারণত ম্যাট্রিক্সের আকার, উপাদানের বৈশিষ্ট্য এবং কার্যকারিতা অনুসারে ভিন্ন হয়। নিচে ম্যাট্রিক্সের কিছু প্রধান প্রকারের বর্ণনা দেওয়া হলো:


১. শূন্য ম্যাট্রিক্স (Zero Matrix):
যে ম্যাট্রিক্সের সমস্ত উপাদান শূন্য থাকে তাকে শূন্য ম্যাট্রিক্স বলে। এটি O দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

২. একক ম্যাট্রিক্স (Identity Matrix):
যে স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের প্রধান কর্ণে সবগুলাে উপাদান 1 এবং বাকি সব উপাদান 0 থাকে, তাকে একক ম্যাট্রিক্স বলে। এটি I দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

৩. ডায়াগোনাল ম্যাট্রিক্স (Diagonal Matrix):
যে স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের প্রধান কর্ণ ছাড়া অন্যান্য সব উপাদান শূন্য থাকে, তাকে ডায়াগোনাল ম্যাট্রিক্স বলে। অর্থাৎ, শুধুমাত্র প্রধান কর্ণে মান থাকবে।

৪. উপ-ত্ৰিভুজাকৃতি ম্যাট্রিক্স (Triangular Matrix):
যে স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের উপরের বা নিচের ত্রিভুজ আকারে উপাদান থাকে এবং বাকি উপাদানগুলো শূন্য থাকে, তাকে ত্রিভুজাকৃতি ম্যাট্রিক্স বলা হয়। এটি দুই প্রকার হতে পারে:

  • উপরের ত্রিভুজাকৃতি ম্যাট্রিক্স (Upper Triangular Matrix): প্রধান কর্ণ এবং এর উপরে মান থাকে।
  • নিচের ত্রিভুজাকৃতি ম্যাট্রিক্স (Lower Triangular Matrix): প্রধান কর্ণ এবং এর নিচে মান থাকে।

৫. স্কেলার ম্যাট্রিক্স (Scalar Matrix):
যে ডায়াগোনাল ম্যাট্রিক্সের প্রধান কর্ণে সমান মান থাকে এবং অন্য সব উপাদান শূন্য থাকে, তাকে স্কেলার ম্যাট্রিক্স বলে।

৬. শিম্যাট্রিক ম্যাট্রিক্স (Symmetric Matrix):
যে ম্যাট্রিক্সের উপাদান aij=aji হয়, তাকে শিম্যাট্রিক ম্যাট্রিক্স বলা হয়। অর্থাৎ, ম্যাট্রিক্সটি প্রধান কর্ণের দুই পাশে আয়নাকারভাবে সমান থাকে।

৭. এন্টি-সিম্যাট্রিক ম্যাট্রিক্স (Anti-Symmetric Matrix):
যে ম্যাট্রিক্সের উপাদান aij=aji হয় এবং প্রধান কর্ণের উপাদান শূন্য থাকে, তাকে এন্টি-সিম্যাট্রিক ম্যাট্রিক্স বলে।

৮. একক সারি বা কলামের ম্যাট্রিক্স (Row Matrix / Column Matrix):

  • সারি ম্যাট্রিক্স (Row Matrix): একটি মাত্র সারি নিয়ে গঠিত ম্যাট্রিক্স।
  • কলাম ম্যাট্রিক্স (Column Matrix): একটি মাত্র কলাম নিয়ে গঠিত ম্যাট্রিক্স।

৯. ক্রান্তিকাল ম্যাট্রিক্স (Transposed Matrix):
যদি কোনো ম্যাট্রিক্সের সারি ও কলাম স্থানান্তরিত করে তৈরি করা হয়, তবে সেটিকে ক্রান্তিকাল ম্যাট্রিক্স বলে। A ম্যাট্রিক্সের ক্রান্তিকাল ম্যাট্রিক্স AT দ্বারা প্রকাশিত হয়।


এগুলো ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের ম্যাট্রিক্স রয়েছে, যেমন ব্লক ম্যাট্রিক্স, ইডেম্পোটেন্ট ম্যাট্রিক্স, অরথোগোনাল ম্যাট্রিক্স ইত্যাদি।

Content added By
Content updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

ম্যাট্রিক্সের সমতা, যোগ, বিয়োগ ও গুণ

1.8k
1.8k

ম্যাট্রিক্স অ্যালজেব্রার মধ্যে সমতা, যোগ, বিয়োগ ও গুণের বিভিন্ন নিয়ম রয়েছে। নিচে প্রতিটি নিয়মের ব্যাখ্যা দেয়া হলো:


ম্যাট্রিক্সের সমতা (Equality of Matrices):
দুটি ম্যাট্রিক্স A এবং B সমান হবে যদি:

  1. তাদের আকার (রো এবং কলামের সংখ্যা) একই হয়।
  2. তাদের প্রতিটি উপাদান সমান হয়, অর্থাৎ aij=bij

যদি এই দুই শর্ত পূর্ণ হয়, তবে A=B


ম্যাট্রিক্সের যোগ (Addition of Matrices):
যদি দুটি ম্যাট্রিক্সের আকার (রো এবং কলাম সংখ্যা) একই হয়, তবে তাদের যোগ করা সম্ভব। A এবং B দুটি ম্যাট্রিক্স হলে তাদের যোগকে A+B হিসেবে প্রকাশ করা হয়। এটি নিচের নিয়ম অনুসারে হয়:

\[
(A + B){ij} = a{ij} + b_{ij}
\]

উদাহরণস্বরূপ, যদি

A=(1234)এবংB=(5678)

তাহলে,

A+B=(1+52+63+74+8)=(681012)


ম্যাট্রিক্সের বিয়োগ (Subtraction of Matrices):
যদি দুটি ম্যাট্রিক্সের আকার একই হয়, তবে তাদের বিয়োগ করা সম্ভব। A এবং B দুটি ম্যাট্রিক্স হলে তাদের বিয়োগকে AB হিসেবে প্রকাশ করা হয়। এটি নিচের নিয়ম অনুসারে হয়:

\[
(A - B){ij} = a{ij} - b_{ij}
\]

উদাহরণস্বরূপ, যদি

A=(5678)এবংB=(1234)

তাহলে,

AB=(51627384)=(4444)


ম্যাট্রিক্সের গুণ (Multiplication of Matrices):
ম্যাট্রিক্সের গুণ দুই ধরনের হতে পারে: স্কেলার গুণ এবং ম্যাট্রিক্স গুণ।

১. স্কেলার গুণ (Scalar Multiplication):
কোনো ম্যাট্রিক্সের প্রতিটি উপাদানকে একটি নির্দিষ্ট স্কেলার সংখ্যার সাথে গুণ করা হয়। যদি k একটি স্কেলার সংখ্যা এবং A একটি ম্যাট্রিক্স হয়, তবে kA এর উপাদানগুলো হবে kaij

উদাহরণস্বরূপ, যদি

A=(1234)এবংk=3

তাহলে,

kA=3×(1234)=(36912)

২. ম্যাট্রিক্স গুণ (Matrix Multiplication):
দুটি ম্যাট্রিক্স A এবং B গুণ করতে হলে A-এর কলামের সংখ্যা এবং B-এর সারির সংখ্যা সমান হতে হবে। যদি A একটি m×n ম্যাট্রিক্স এবং B একটি n×p ম্যাট্রিক্স হয়, তবে তাদের গুণফল AB একটি m×p ম্যাট্রিক্স হবে।

প্রতিটি উপাদান cij নির্ণয় করার নিয়ম হলো:

cij=nk=1aikbkj

উদাহরণস্বরূপ, যদি

A=(1234)এবংB=(2013)

তাহলে,

AB=((12+21)(10+23)(32+41)(30+43))=(461012)


এগুলোই ম্যাট্রিক্সের সমতা, যোগ, বিয়োগ এবং গুণের প্রধান নিয়ম।

Content updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

a21a12a33

a22a11a33

a23a11a32

0

A |4, -2, 9|
|4812-1-2-3369|
|4-20|
|11|
[2.5]
[16-2.53]
[.5-2]
[-1623.5]
None

ম্যাট্রিক্সের সরল

544
544

ম্যাট্রিক্স সরলীকরণের জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত তিন ধরনের রো অপারেশন ব্যবহার করা হয়:

  1. রো সোয়াপ (Row Swap): কোনো দুটি সারি বিনিময় করা।
  2. স্কেলার মাল্টিপ্লিকেশন (Scalar Multiplication): একটি সারির সমস্ত উপাদানকে কোনো একটি নির্দিষ্ট সংখ্যার সঙ্গে গুণ করা।
  3. রো এডিশন (Row Addition): একটি সারির সঙ্গে অন্য একটি সারিকে যোগ বা বিয়োগ করা।

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

নির্ণায়ক

465
465

নির্ণায়ক (Determinant) হলো একটি স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের একটি বিশেষ গাণিতিক মান, যা ম্যাট্রিক্সের উপাদানগুলোর উপর ভিত্তি করে নির্ণয় করা হয়। নির্ণায়ক অনেক গাণিতিক প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন সিস্টেম অফ ইকুয়েশন সমাধান, ম্যাট্রিক্সের বিপরীত নির্ণয় এবং স্থানাঙ্ক নির্ধারণে।

নিচে নির্ণায়ক সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্ণনা করা হলো:


১. নির্ণায়কের চিহ্ন ও নির্দেশনা

নির্ণায়ককে সাধারণত |A| বা det(A) দ্বারা প্রকাশ করা হয়, যেখানে A একটি স্কোয়ার ম্যাট্রিক্স। নির্ণায়কের মান ম্যাট্রিক্সের আকারের উপর নির্ভরশীল এবং এটি একটি একক সংখ্যা।


২. ২x২ ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক

একটি 2×2 ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক খুব সহজে বের করা যায়। যদি

A=(abcd)

তাহলে নির্ণায়ক |A| হবে:

|A|=adbc

উদাহরণস্বরূপ, যদি

A=(3846)

তাহলে,

|A|=(3×6)(8×4)=1832=14


৩. ৩x৩ ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক

একটি 3×3 ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয় করতে আরও কিছু বেশি হিসাব প্রয়োজন। যদি

A=(abcdefghi)

তাহলে নির্ণায়ক |A| হবে:

|A|=a(eifh)b(difg)+c(dheg)

উদাহরণস্বরূপ, যদি

A=(123045106)

তাহলে,

|A|=1(4×65×0)2(0×65×1)+3(0×04×1)

=1×242×5+3×4=24+1012=22


৪. নির্ণায়কের বৈশিষ্ট্য

নির্ণায়কের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:

  • শূন্য নির্ণায়ক: যদি কোনো স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক 0 হয়, তবে ম্যাট্রিক্সটি সিংগুলার (singular) ম্যাট্রিক্স, অর্থাৎ এর কোনো বিপরীত ম্যাট্রিক্স নেই।
  • বিপরীত নির্ণায়ক: কোনো ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক 0 না হলে সেটি ইনভার্টেবল, অর্থাৎ এর একটি বিপরীত ম্যাট্রিক্স রয়েছে।
  • রো ও কলাম বিনিময়: কোনো দুটি রো বা কলাম বিনিময় করলে নির্ণায়কের চিহ্ন পরিবর্তিত হয় (ধনাত্মক থেকে ঋণাত্মক বা ঋণাত্মক থেকে ধনাত্মক)।
  • রো বা কলামের গুণফল: যদি একটি রো বা কলামের সব উপাদান k-গুণ বৃদ্ধি করা হয়, তবে নির্ণায়কও k-গুণ বৃদ্ধি পায়।

৫. নির্ণায়কের প্রয়োগ

নির্ণায়ক বিভিন্ন গাণিতিক ও প্রকৌশল সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়:

  • লিনিয়ার সিস্টেম সমাধান: নির্ণায়ক ব্যবহার করে ম্যাট্রিক্স সমীকরণ সমাধান করা যায়, যেমন ক্র্যামারের নিয়ম।
  • জ্যামিতিক রূপান্তর: নির্ণায়কের মাধ্যমে ত্রিভুজ বা বহুভুজের এলাকা নির্ণয় করা যায়।
  • ইনভার্স ম্যাট্রিক্স: নির্ণায়ক ব্যবহার করে একটি ম্যাট্রিক্সের ইনভার্স (বিপরীত) নির্ণয় করা হয়।

এই ছিল নির্ণায়ক সম্পর্কে একটি সারাংশ, যা ম্যাট্রিক্স অ্যালজেব্রা ও গণিতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে সহায়ক।

নির্ণায়কের ধর্মাবলি

579
579

নির্ণায়কের (Determinant) ধর্মাবলী বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সমাধান সহজ করতে সহায়ক। ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক সম্পর্কিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মাবলী নিচে বর্ণনা করা হলো:


১. ইউনিট ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক:
একটি ইউনিট ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক সবসময় 1 হয়। যেমন, In যদি n×n অর্ডারের একটি ইউনিট ম্যাট্রিক্স হয়, তবে |In|=1


২. দুটি সারি বা কলাম অভিন্ন হলে নির্ণায়ক শূন্য:
যদি কোনো স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের দুটি সারি বা দুটি কলাম একই হয়, তাহলে ওই ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক শূন্য হবে। অর্থাৎ, ম্যাট্রিক্সটি সিংগুলার।


৩. সারি বা কলাম বিনিময়ের ফলে নির্ণায়কের চিহ্ন পরিবর্তন:
কোনো ম্যাট্রিক্সের দুটি সারি বা কলাম বিনিময় করলে নির্ণায়কের চিহ্ন পরিবর্তিত হয়। অর্থাৎ, ধনাত্মক নির্ণায়ক ঋণাত্মক এবং ঋণাত্মক নির্ণায়ক ধনাত্মক হয়ে যায়।


৪. সারি বা কলামের সব উপাদানকে একটি সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে নির্ণায়কও ওই সংখ্যাটি দ্বারা গুণিত হয়:
যদি ম্যাট্রিক্সের একটি সারি বা কলামের সব উপাদানকে k দ্বারা গুণ করা হয়, তবে নির্ণায়কও k-গুণ বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ, যদি A একটি n×n ম্যাট্রিক্স হয় এবং কোনো এক সারিকে k দ্বারা গুণ করা হয়, তবে নতুন নির্ণায়ক হবে k×|A|


৫. নির্ণায়ক বিভাজনীয়:
যদি ম্যাট্রিক্সের একটি সারির প্রত্যেকটি উপাদানকে অন্য একটি সারির সংশ্লিষ্ট উপাদানের গুণফল যোগ করে গঠন করা হয়, তবে নির্ণায়ক অপরিবর্তিত থাকবে। এটি নির্দেশ করে যে, রো অপারেশনে যোগ বা বিয়োগ করা হলে নির্ণায়কের মান পরিবর্তিত হয় না।


৬. স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক শূন্য হলে তা সিংগুলার:
কোনো স্কোয়ার ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক শূন্য হলে সেটি সিংগুলার (Singular) ম্যাট্রিক্স হিসেবে বিবেচিত হয়, যার কোনো ইনভার্স (বিপরীত) ম্যাট্রিক্স নেই।


৭. নির্ণায়ক বহুগুণনের ধর্ম (Determinant of Product):
দুটি স্কোয়ার ম্যাট্রিক্স A এবং B-এর গুণফল AB হলে, তাদের নির্ণায়ক হবে |AB|=|A||B|


৮. ট্রায়াঙ্গুলার ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক:
যদি কোনো ম্যাট্রিক্স ত্রিভুজাকার হয় (উপরের বা নিচের ত্রিভুজ আকৃতি), তবে তার নির্ণায়ক হবে প্রধান কর্ণের উপাদানগুলোর গুণফল। অর্থাৎ, যদি A একটি ত্রিভুজাকার ম্যাট্রিক্স হয়, তবে |A|=a11×a22×...×ann


৯. ম্যাট্রিক্সের ট্রান্সপোজের নির্ণায়ক:
কোনো ম্যাট্রিক্সের ট্রান্সপোজের নির্ণায়ক মূল ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়কের সমান হয়। অর্থাৎ, যদি A একটি n×n ম্যাট্রিক্স হয়, তবে |AT|=|A|


১০. একাধিক সারি বা কলাম যদি নির্দিষ্ট সমানুপাতিক হয়, তবে নির্ণায়ক শূন্য:
যদি ম্যাট্রিক্সের দুটি সারি বা কলাম একে অপরের সমানুপাতিক হয়, তবে সেই ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক শূন্য হবে।


এই ধর্মগুলো নির্ণায়ক সম্পর্কিত গাণিতিক ক্রিয়াগুলো সহজ এবং সঠিকভাবে সম্পাদন করতে সহায়ক।

নির্ণায়কের ধর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধান

409
409

নির্ণায়কের ধর্মাবলী ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা যায়। নিচে কিছু সাধারণ সমস্যা এবং নির্ণায়কের ধর্মের প্রয়োগের মাধ্যমে সেগুলোর সমাধান প্রদর্শন করা হলো।


উদাহরণ ১: নির্ণায়ক শূন্য হলে ম্যাট্রিক্স সিংগুলার কিনা যাচাই করা

ধরা যাক, একটি 3×3 ম্যাট্রিক্স A দেওয়া হয়েছে:

A=(123456789)

A ম্যাট্রিক্সটি সিংগুলার কিনা তা নির্ণয় করতে হলে আমরা এর নির্ণায়ক বের করব।

|A|=1×(5×96×8)2×(4×96×7)+3×(4×85×7)

=1×(4548)2×(3642)+3×(3235)

=1×(3)2×(6)+3×(3)

=3+129=0

যেহেতু |A|=0, তাই A একটি সিংগুলার ম্যাট্রিক্স। অর্থাৎ, এর কোনো বিপরীত (Inverse) নেই।


উদাহরণ ২: দুটি ম্যাট্রিক্সের গুণফলের নির্ণায়ক নির্ণয়

ধরা যাক, A এবং B দুটি 2×2 ম্যাট্রিক্স, যেখানে

A=(2314)এবংB=(0112)

আমরা জানতে চাই |AB| কত।

প্রথমে |A| এবং |B| নির্ণয় করি:

|A|=2×43×1=83=5

|B|=0×21×(1)=0+1=1

এখন, নির্ণায়কের ধর্মাবলী অনুযায়ী, |AB|=|A|×|B|, সুতরাং

|AB|=5×1=5


উদাহরণ ৩: নির্ণায়কের সাহায্যে সিস্টেম অফ লিনিয়ার ইকুয়েশন সমাধান

ধরা যাক, আমাদের নিচের দুটি সমীকরণ দেওয়া আছে:

2x+3y=5
4x+y=11

এটি সমাধান করার জন্য আমরা ক্র্যামের নিয়ম ব্যবহার করতে পারি।

প্রথমে কফিশিয়েন্ট ম্যাট্রিক্সটি লিখি এবং এর নির্ণায়ক বের করি:

A=(2341)

|A|=2×13×4=212=10

এখন, x এবং y-এর জন্য আলাদা ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক বের করি।

x-এর জন্য ম্যাট্রিক্স

Ax=(53111)

|Ax|=5×13×11=533=28

y-এর জন্য ম্যাট্রিক্স

Ay=(25411)

|Ay|=2×115×4=2220=2

এখন, ক্র্যামের নিয়ম অনুযায়ী,

x=|Ax||A|=2810=2.8

y=|Ay||A|=210=0.2

অতএব, সমাধান হলো x=2.8 এবং y=0.2


উদাহরণ ৪: একটি ত্রিভুজাকার ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয়

যদি একটি ত্রিভুজাকার ম্যাট্রিক্স দেওয়া থাকে যেমন:

A=(300250114)

ত্রিভুজাকার ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয় করার জন্য শুধুমাত্র প্রধান কর্ণের উপাদানগুলোর গুণফল করতে হবে:

|A|=3×5×4=60


উদাহরণ ৫: ট্রান্সপোজ ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয়

ধরা যাক, একটি ম্যাট্রিক্স A দেওয়া আছে:

A=(2134)

আমরা জানি যে |AT|=|A|, সুতরাং প্রথমে |A| নির্ণয় করি:

|A|=2×4(1)×3=8+3=11

তাহলে |AT|=11


এই উদাহরণগুলো থেকে বোঝা যায় যে নির্ণায়কের ধর্মাবলী ব্যবহার করে ম্যাট্রিক্স সম্পর্কিত বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যা সমাধান করা সহজ হয়ে যায়।

নির্ণায়কের অনুরাশি ও সহগুনক

2.6k
2.6k

ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয়ের জন্য অনুরাশি (Minor) ও সহগুণক (Cofactor) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অনুরাশি ও সহগুণক ম্যাট্রিক্সের উপাদানগুলোর উপর ভিত্তি করে নির্ণায়ক নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।

নিচে অনুরাশি ও সহগুণকের সংজ্ঞা এবং তাদের ব্যবহারের পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো:


অনুরাশি (Minor)

কোনো n×n ম্যাট্রিক্সের একটি নির্দিষ্ট উপাদানের অনুরাশি বলতে বোঝায় ওই উপাদানটি বাদ দিলে বাকি উপাদানগুলো দিয়ে গঠিত (n1)×(n1) আকারের ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক।

উদাহরণস্বরূপ, ধরা যাক একটি 3×3 ম্যাট্রিক্স A রয়েছে:

A=(a11a12a13a21a22a23a31a32a33)

এখন, a11 এর অনুরাশি বের করতে হলে প্রথম সারি ও প্রথম কলাম বাদ দিয়ে (n1)×(n1) ম্যাট্রিক্সটি নিতে হবে, অর্থাৎ:

Minor of a11=M11=|a22a23a32a33|

এভাবে প্রতিটি উপাদানের জন্য তার অনুরাশি নির্ণয় করা যায়।


সহগুণক (Cofactor)

সহগুণক হলো কোনো নির্দিষ্ট উপাদানের অনুরাশির সাথে একটি চিহ্ন সংযুক্ত মান। একটি aij উপাদানের সহগুণক Cij নির্ণয় করা হয় এভাবে:

Cij=(1)i+jMij

এখানে Mij হলো aij উপাদানের অনুরাশি এবং (1)i+j চিহ্ন নির্ধারণ করে। যদি i+j জোড় সংখ্যা হয় তবে এটি ধনাত্মক থাকে, আর যদি বিজোড় সংখ্যা হয় তবে এটি ঋণাত্মক হয়।

উদাহরণস্বরূপ, যদি a11-এর অনুরাশি M11 হয়, তবে সহগুণক C11 হবে:

C11=(1)1+1M11=1M11=M11

আর a12-এর জন্য,

C12=(1)1+2M12=M12


উদাহরণ

ধরা যাক, একটি 3×3 ম্যাট্রিক্স A রয়েছে:

A=(231456789)

আমরা a11, a12, এবং a13-এর জন্য অনুরাশি ও সহগুণক নির্ণয় করব।

  1. a11-এর জন্য:
    • অনুরাশি, M11=|5689|=(5968)=4548=3
    • সহগুণক, C11=(1)1+1M11=1(3)=3
  2. a12-এর জন্য:
    • অনুরাশি, M12=|4679|=(4967)=3642=6
    • সহগুণক, C12=(1)1+2M12=(6)=6
  3. a13-এর জন্য:
    • অনুরাশি, M13=|4578|=(4857)=3235=3
    • সহগুণক, C13=(1)1+3M13=3

নির্ণায়ক নির্ণয়ে অনুরাশি ও সহগুণকের ব্যবহার

একটি 3×3 ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক বের করতে হলে প্রথম সারির উপাদানগুলো এবং তাদের সহগুণক ব্যবহার করা হয়:

|A|=a11C11+a12C12+a13C13

উপরের উদাহরণ অনুযায়ী,

|A|=2(3)+36+1(3)

=6+183=9


এভাবেই অনুরাশি ও সহগুণক ব্যবহার করে ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয় করা যায়।

নির্নায়কের মান নির্নয়

390
390

নির্ণায়কের মান নির্ণয় ম্যাট্রিক্স অ্যালজেব্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নির্ণায়ক নির্ণয় করতে হলে সাধারণত কিছু ধাপ ও নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। এখানে বিভিন্ন আকারের ম্যাট্রিক্সের জন্য নির্ণায়ক নির্ণয়ের পদ্ধতি আলোচনা করা হয়েছে।


১. 2×2 ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয়

যদি A একটি 2×2 ম্যাট্রিক্স হয়:

A=(abcd)

তাহলে নির্ণায়ক |A| নির্ণয়ের নিয়ম হলো:

|A|=adbc

উদাহরণ:

যদি

A=(3425)

তাহলে,

|A|=(3×5)(4×2)=158=7


২. 3×3 ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয়

একটি 3×3 ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক বের করতে হলে অনুরাশি এবং সহগুণক ব্যবহার করতে হয়। যদি

A=(a11a12a13a21a22a23a31a32a33)

তাহলে নির্ণায়ক |A| বের করার নিয়ম হলো:

|A|=a11(a22a33a23a32)a12(a21a33a23a31)+a13(a21a32a22a31)

উদাহরণ:

যদি

A=(123456789)

তাহলে,

|A|=1×(5×96×8)2×(4×96×7)+3×(4×85×7)

=1×(4548)2×(3642)+3×(3235)

=1×32×6+3×3

=3+129=0

তাহলে, |A|=0, অর্থাৎ এই ম্যাট্রিক্সটি সিংগুলার।


৩. উচ্চতর অর্ডারের ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয় (ল্যাপ্লেস এক্সপানশন বা কোফ্যাক্টর এক্সপানশন)

উচ্চতর অর্ডারের ম্যাট্রিক্সের জন্য নির্ণায়ক নির্ণয় করতে ল্যাপ্লেস এক্সপানশন বা কোফ্যাক্টর এক্সপানশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এটি একাধিক স্তরের অনুরাশি ও সহগুণক ব্যবহার করে বের করা হয়।

একটি n×n ম্যাট্রিক্সের ক্ষেত্রে প্রথম সারি বা কলাম ধরে কোফ্যাক্টর এক্সপানশন করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি A একটি 4×4 ম্যাট্রিক্স হয়, তবে প্রথম সারির জন্য ল্যাপ্লেস এক্সপানশনের নিয়ম প্রয়োগ করা যায়:

|A|=a11C11+a12C12+a13C13+a14C14

এখানে, Cij হলো সহগুণক।


৪. ত্রিভুজাকার ম্যাট্রিক্সের নির্ণায়ক নির্ণয়

যদি ম্যাট্রিক্সটি ত্রিভুজাকার হয় (উপরের ত্রিভুজাকার বা নিচের ত্রিভুজাকার), তবে তার নির্ণায়ক বের করতে শুধু প্রধান কর্ণের উপাদানগুলো গুণ করলেই হয়।

ধরা যাক,

A=(300250114)

এটি একটি নিচের ত্রিভুজাকার ম্যাট্রিক্স, তাই এর নির্ণায়ক হবে:

|A|=3×5×4=60


সারসংক্ষেপ

নির্ণায়ক নির্ণয় বিভিন্ন আকারের ম্যাট্রিক্সের জন্য ভিন্ন হতে পারে। ছোট আকারের জন্য সহজ সরল গাণিতিক প্রক্রিয়া এবং বড় আকারের জন্য অনুরাশি ও সহগুণক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

বর্গম্যট্রিক্সের বিপরীত ম্যাট্রিক্স

693
693

বিপরীত ম্যাট্রিক্সের শর্ত

১. নির্ণায়ক শূন্য না হওয়া:
একটি বর্গম্যট্রিক্সের বিপরীত থাকতে হলে এর নির্ণায়ক শূন্য হওয়া যাবে না। অর্থাৎ, যদি A=0 হয়, তাহলে A-এর কোনো বিপরীত ম্যাট্রিক্স থাকবে না, এবং তাকে সিংগুলার (Singular) ম্যাট্রিক্স বলা হয়।

২. বিপরীত ম্যাট্রিক্সের বৈশিষ্ট্য:
(A1)1=A এবং (A×B)1=B1×A1


বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয়ের পদ্ধতি

১. সহগুণক এবং অনুরাশি ব্যবহার করে বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয় (Cofactor and Adjoint Method)

একটি n×n ম্যাট্রিক্সের বিপরীত নির্ণয়ের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:

  1. সহগুণক ম্যাট্রিক্স বের করা (Cofactor Matrix):
    প্রতিটি উপাদানের সহগুণক বের করে সহগুণক ম্যাট্রিক্স তৈরি করতে হয়।
  2. অ্যাডজয়েন্ট ম্যাট্রিক্স নির্ণয় (Adjugate Matrix):
    সহগুণক ম্যাট্রিক্সের ট্রান্সপোজ নিলে অ্যাডজয়েন্ট ম্যাট্রিক্স পাওয়া যায়।
  3. বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয়:
    নির্ণায়ক শূন্য নয় এমন ম্যাট্রিক্সের জন্য বিপরীত ম্যাট্রিক্স A1 বের করা যায়:

    A1=1A×adj(A)

    এখানে A হলো A-এর নির্ণায়ক এবং adj(A) হলো অ্যাডজয়েন্ট ম্যাট্রিক্স।

উদাহরণ:

ধরা যাক,

A=(4726)

ধাপ ১: নির্ণায়ক নির্ণয়

A=(4×6)(7×2)=2414=10

ধাপ ২: সহগুণক ম্যাট্রিক্স বের করা

প্রতিটি উপাদানের জন্য অনুরাশি বের করে এবং সহগুণক চিহ্ন প্রয়োগ করে, আমরা পাই:

Cofactor Matrix=(6724)

ধাপ ৩: অ্যাডজয়েন্ট ম্যাট্রিক্স নির্ণয়

সহগুণক ম্যাট্রিক্সের ট্রান্সপোজ নিলে পাই:

adj(A)=(6274)

ধাপ ৪: বিপরীত ম্যাট্রিক্স নির্ণয়

A1=1A×adj(A)=110×(6274)

=(0.60.20.70.4)

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

একঘাত সমীকরণ জোট

453
453

উদাহরণ

ধরা যাক, আমাদের কাছে নিচের দুটি একঘাত সমীকরণ রয়েছে:

2x+3y=5

4x+y=11

আমরা এই সমীকরণগুলোকে জোট আকারে প্রকাশ করতে পারি, যাতে সমাধান করা সহজ হয়।

Content added || updated By

বিপরীত ম্যাট্রিক্সের সাহায্যে

703
703

ধাপ ১: ম্যাট্রিক্স আকারে প্রকাশ

উপরের সমীকরণগুলোকে আমরা AX=B আকারে লিখতে পারি, যেখানে:

A=(2341),X=(xy),B=(511)

তাহলে সমীকরণটি হবে:

(2341)(xy)=(511)


ধাপ ২: A ম্যাট্রিক্সের বিপরীত নির্ণয় করা

আমাদের সমীকরণটি AX=B আকারে, এবং X-এর সমাধান পেতে হলে X=A1B আকারে পুনর্লিখন করতে হবে। এজন্য প্রথমে A-এর বিপরীত ম্যাট্রিক্স A1 নির্ণয় করতে হবে।

A-এর নির্ণায়ক A নির্ণয় করা

A=(2×1)(3×4)=212=10

যেহেতু A0, তাই A-এর একটি বিপরীত ম্যাট্রিক্স রয়েছে।

সহগুণক ও অ্যাডজয়েন্ট ম্যাট্রিক্স ব্যবহার করে A1 নির্ণয় করা

প্রতিটি উপাদানের সহগুণক নির্ণয় করে এবং অ্যাডজয়েন্ট ম্যাট্রিক্সের মাধ্যমে A1 নির্ণয় করা যায়:

A1=1Aadj(A)

A=(2341) এর জন্য অ্যাডজয়েন্ট ম্যাট্রিক্স হলো:

adj(A)=(1342)

তাহলে,

A1=110(1342)=(0.10.30.40.2)


ধাপ ৩: X=A1B ব্যবহার করে সমাধান নির্ণয়

এখন X=A1B ব্যবহার করে X-এর মান নির্ণয় করা যাক:

X=(0.10.30.40.2)(511)

গুণফল নির্ণয় করে পাই:

X=((0.1×5)+(0.3×11)(0.4×5)+(0.2×11))

=(0.5+3.322.2)=(2.80.2)


সমাধান

অতএব, সমীকরণ সিস্টেমের সমাধান হলো:

x=2.8,y=0.2


এইভাবে, বিপরীত ম্যাট্রিক্সের সাহায্যে একঘাত সমীকরণের সমাধান করা যায়।

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

ক্রেমারের নিয়মে

691
691

ক্রেমারের নিয়ম (Cramer's Rule) হল একঘাত সমীকরণ জোট সমাধানের একটি পদ্ধতি, যা ম্যাট্রিক্স নির্ণায়ক ব্যবহার করে সমীকরণের প্রতিটি অজ্ঞাত রাশি নির্ণয় করে। ক্রেমারের নিয়ম কেবল তখনই ব্যবহার করা যায় যখন সমীকরণগুলোর সংখ্যা এবং অজ্ঞাত রাশির সংখ্যা সমান হয় এবং সমীকরণ জোটের নির্ণায়ক শূন্য না হয়।


উদাহরণ

ধরা যাক, আমাদের কাছে দুটি একঘাত সমীকরণ রয়েছে:

2x+3y=5
4x+y=11

আমরা ক্রেমারের নিয়ম ব্যবহার করে এই সমীকরণগুলোর সমাধান বের করব।


ধাপ ১: কফিশিয়েন্ট ম্যাট্রিক্স এবং এর নির্ণায়ক নির্ণয়

প্রথমে আমরা কফিশিয়েন্ট ম্যাট্রিক্স A তৈরি করি এবং এর নির্ণায়ক |A| নির্ণয় করি।

A=(2341)

|A|=(2×1)(3×4)=212=10

যেহেতু |A|0, তাই ক্রেমারের নিয়ম প্রয়োগ করা সম্ভব।


ধাপ ২: x এবং y-এর জন্য নির্ণায়ক নির্ণয় করা

x-এর নির্ণায়ক |Ax| নির্ণয় করা

Ax হলো সেই ম্যাট্রিক্স যা কফিশিয়েন্ট ম্যাট্রিক্স A-এর প্রথম কলামটি B ভেক্টর দিয়ে প্রতিস্থাপন করে গঠিত হয়।

Ax=(53111)

|Ax|=(5×1)(3×11)=533=28

y-এর নির্ণায়ক |Ay| নির্ণয় করা

Ay হলো সেই ম্যাট্রিক্স যা কফিশিয়েন্ট ম্যাট্রিক্স A-এর দ্বিতীয় কলামটি B ভেক্টর দিয়ে প্রতিস্থাপন করে গঠিত হয়।

Ay=(25411)

|Ay|=(2×11)(5×4)=2220=2


ধাপ ৩: ক্রেমারের নিয়ম প্রয়োগ করে x এবং y নির্ণয় করা

ক্রেমারের নিয়ম অনুযায়ী,

x=|Ax||A|=2810=2.8

y=|Ay||A|=210=0.2


সমাধান

অতএব, সমীকরণ জোটের সমাধান হলো:

x=2.8,y=0.2


এইভাবে, ক্রেমারের নিয়ম ব্যবহার করে একঘাত সমীকরণের সমাধান করা যায়।

টপ রেটেড অ্যাপ

স্যাট অ্যাকাডেমী অ্যাপ

আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।

ভিডিও
লাইভ ক্লাস
এক্সাম
ডাউনলোড করুন
Promotion
;